হযরত লোকমান আঃ তার আপন ছেলেকে দেওয়া ৭৬টি উপদেশ
১। বেটা কর্জ হইতে নিজেকে হেফাযত রাখিও।কেননা ইহা দিনের বেলায় অপমান এবং রাত্রিতে দুঃচিন্তা।
২। বেটা !তুমি মোরগের চাইতে বেশী অক্ষম হইও না।সে তো শেষ রাত্রিতে জাগিয়া চিৎকার শুরু করিয়া দেয়,আর তুমি নিজের বিছানায় পড়িয়া ঘুমাইতে থাকো।
৩। বেটা ! গুরুত্ব সহকারে জানাযায় শরীক হইও এবং অহেতুক অনুষ্ঠানাদি শরীক
হওয়া হইতে বাঁচিয়া থাকিও।
৪। বৎস আল্লাহর সান্নিধ্য অবলম্বন করবে ।
৫। অন্যকে উপদেশ দেওয়ার আগে নিজে আমল করার চেষ্টা কর ।
৬। নিজের মান মর্যাদা বজায় রেখে কথা বলবে ।
৭। ভাল মানুষ রূপে বিবেচিত হওয়ার চেষ্টা করবে ।
৮। স্বীয় অধিকারের প্রতি সচেতন থাকবে ।
৯। গোপন তথ্য কারো নিকট প্রকাশ করবে না ।
১০। বিপদে বন্ধুর পরীক্ষা নিবে ।
১১। বন্ধুদের ভাল মন্দ উভয়টাই পরীক্ষা করবে ।
১২। বিচক্ষণ এবং জ্ঞানী ব্যক্তিদের সাথে বন্ধুত্ব করবে ।
১৩। ভালকাজে পুণঃপুণঃ অংশগ্রহণ করবে ।
১৪। নিজের কথা প্রমাণ করে দিবে ।
১৫। বন্ধুদের সাধ্যমত ভালবাসবে ।
১৬। শত্রু মিত্র সকলের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করবে ।
১৭। মাতা পিতাকে সর্বাধিক সম্মান করবে ।
১৮। শিষ্যকে সর্বাধিক মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখবে ।
১৯। আয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ব্যয় করবে ।
১৯। প্রত্যেক কাজে মধ্যপন্হা অবলম্বন করবে ।
২০। কথা বলার সময় মুখ আয়ত্বের মধ্যে রাখবে ।
২১। বীরত্ব কে নীতি হিসাবে গ্রহণ করবে ।
২২। শরীর এবং পোষাক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে ।
২৩। ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকবে ।
২৪। প্রচলিত অস্ত্র- সস্ত্র ও যানবাহন পরিচালনা শিখে নিবে ।
২৫। প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার যোগ্যতা অনুযায়ী দায়িত্ব প্রদান করবে ।
২৬। রাতের বেলায় যদি কথা বলার প্রয়োজন হয় তাহলে আস্তে এবং নরম স্বরে কথা বলবে ।
২৭। দিনের বেলায় কথা বলার সময় চতুর্দিকে লক্ষ্য করে কথা বলবে ।
২৮। কম কথা বলা কম খাওয়া এবং কম ঘুমানোর অভ্যাস করবে ।
২৯। নিজের জন্য যা পচন্দ করো না তা অন্যের জন্য পচন্দ করবে না ।
৩০। বিচক্ষণতা ও কৌশল অবলম্বন করে কাজ করবে ।
৩১। উপযুক্ত শিক্ষিত না হয়ে অন্যকে শিখাতে যেও না ।
৩২। অন্যের ধন সম্পদের প্রতি লোভ করবে না ।
৩৩। নীতিহীনদের কাছ থেকে কৃতজ্ঞতা আশা করবে না ।
৩৪। কোনো কাজেই চিন্তামুক্ত হইও না ।
৩৫। যে কাজ তুমি করনি এরূপ কাজ করেছ বলে মনে করো না ।
৩৬। আজকের কাজ আগামীকালের জন্য ফেলে রাখবে না ।
৩৭। বড়দের সাথে হাসি ঠাট্টা করতে যেও না ।
৩৮। আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করিও না ।
৩৯। তোমার প্রতি যারা আশা রাখে তাদের নিরাশ করো না ।
৪০। বড়দের সামনে কথা দীর্ঘায়িত করবে না ।
৪১। অতীতের তিক্ততা মনে রেখো না ।
৪২। নিজের ধন সম্পদের কথা অন্যের নিকট প্রকাশ করবে না ।
৪৩। সৎ লোকদের নিন্দা করবে না ।
৪৪। আপনজনদের কাছ থেকে কখনও বিচ্ছিন্ন হইও না ।
৪৫। অহংকার করবে না ।
৪৬। মানুষের সামনে দাঁত খেলাল করবে না ।
৪৭। মানুষের সামনে মুখে বা নাকে অঙ্গুল প্রবেশ করবে না ।
৪৮। শব্দ করে থুতু ফেলবে না ।
৪৯। হাই তোলার সময় মুখে হাত রাখবে ।
৫০। কাউকে জনসম্মুখে লজ্জা দিবে না ।
৫১। চোখ দিয়ে ইঙ্গিত করবে না ।
৫২। এক কথা বারবার বলবে না ।
৫৩। তামাশা মূলক অবাস্তব কথা বলবে না ।
৫৪। ঠাট্টা বিদ্রুপ থেকে বিরত থাকবে ।
৫৫। অন্যের সামনে নিজের প্রশংসা করবে না ।
৫৬। মেয়েদের ন্যায় সাজসজ্জা করবে না ।
৫৭। কথা বলার সময় হাত নাড়াচাড়া করবে না ।
৫৮। আপনজনদের শত্রুর সাথে উঠাবসা করবে না ।
৫৯। কারো মৃত্যুর পর তার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করবে না ।
৬০। যথাসম্ভব ঝগড়া- বিবাদ থেকে বিরত থাকবে ।
৬১। সৎলোকের প্রতি সুধারণা রাখবে ।
৬২। নিজের খানা অন্যের দস্তারখানায় নিয়ে যাবে না ।
৬৩। কোনো কাজেই তাড়াহুড়ো করবে না ।
৬৪। পার্থিব স্বার্থের মোহে নিজেকে দুঃখ কষ্টে ফেল না ।
৬৫। রাগান্বিত অবস্থায়ও ধীর শান্ত ভাবে কথা বলবে ।
৬৬।জামার আস্তিন দ্বারা নাক পরিস্কার করবে না ।
৬৭। সূর্য উদয়ের পূর্বেই শয্যা ত্যাগ করবে ।
৬৮। পথ চলার সময় বড়দের আগে চলবে না ।
৬৯। এদিক সেদিক উকি মেরে দেখবে না ।
৭০। অন্যের কথার মধ্যে বাধা দিয়ে কথা বলবে না ।
৭১। মেহমানের সামনে কারো প্রতি রাগান্বিত হইও না ।
৭২। সন্দেহপ্রবণতা ত্যাগ করতে না পারলে দুনিয়ায় তুমি কোনো বন্ধু খোঁজে পাবে না।
৭৩। বেটা !তুমি এত মিষ্ট হইও না যে,মানুষ তোমাকে গিলিয়া ফেলে।আর
এত তিক্ত হইও না যে মানুষ তোমাকে থুথুর মতো ফেলিয়া দেয়।
৭৪। বেটা !নিজের খানা আল্লাহ্ভীরু লোকদের ব্যতীত কাহাকেও খাওয়াইও না।
আর নিজের কাজে আলেমগনের নিকট হইতে পরার্মশ লইতে থাকিও।
৭৫। বেটা মূর্খের সহিত বন্ধুত্ব করিও না।এমন না হয় তাহার মূর্খতাসুলভ
কথাবার্তা তোমার ভালো লাগা শুরু করে।আর জ্ঞানী লোকের সহিত
শত্রুতা করিও না।এমন না হয় যে,সে তোমার দিক হইতে মুখ ফিরাইয়া রাখে।
৭৬। বেটা !তুমি যেদিন হইতে দুনিয়াতে আসিয়াছ,প্রতিদিন আখেরাতের নিকটবর্তী হইতেছ।
(সুরা লোকমান আয়াত ১ থেকে ৮ পর্যন্ত)
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
অর্থ : শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
الم
আয়াত-১ অর্থ : আলিফ-লাম-মীম।
تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ الْحَكِيمِ
আয়াত-২ অর্থ : এগুলো প্রজ্ঞাময় কিতাবের আয়াত।
هُدًى وَرَحْمَةً لِلْمُحْسِنِينَ
আয়াত-৩ অর্থ : হেদায়েত ও রহমত সৎকর্মপরায়ণদের জন্য।
الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ بِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
আয়াত-৪ অর্থ : যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখেরাত সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।
أُولَٰئِكَ عَلَىٰ هُدًى مِنْ رَبِّهِمْ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
আয়াত-৫ অর্থ : এসব লোকই তাদের পরওয়ারদেগারের তরফ থেকে আগত হেদায়েতের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এরাই সফলকাম।
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
আয়াত-৬ অর্থ : একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।
وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِ آيَاتُنَا وَلَّىٰ مُسْتَكْبِرًا كَأَنْ لَمْ يَسْمَعْهَا كَأَنَّ فِي أُذُنَيْهِ وَقْرًا ۖ فَبَشِّرْهُ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ
আয়াত-৭ অর্থ : যখন ওদের সামনে আমার আয়তসমূহ পাঠ করা হয়, তখন ওরা দম্ভের সাথে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন ওরা তা শুনতেই পায়নি অথবা যেন ওদের দু'কান বধির। সুতরাং ওদেরকে কষ্টদায়ক আযাবের সংবাদ দাও।
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ جَنَّاتُ النَّعِيمِ
আয়াত-৮ অর্থ : যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত।