আপনার প্রধান শত্রকে চিন্হিত করুন
মানুষের জীবনের দুটি বড় শত্রু রয়েছে।
যথাঃ
১/ নফস
২/ শয়তান
এই নফস ও শয়তান দুটোই প্রতি মুহূর্তে আমাদেরকে নানান গুনাহের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে, নফস ভিতর থেকে উদ্বুদ্ধ করে আর শয়তান সেটিকে আমাদের সামনে আকর্ষণীয় করে তুলে তাতে লিপ্ত করায়, নফস ও শয়তান দুটোই আমাদের শত্রু, তবে নফস শয়তানের চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর শত্রু।
কেন ভয়ঙ্কর জানেন ?
কারণ, এই নফসই শয়তানকে শয়তান বানিয়েছে, শয়তানের আগে তো আর কোন শয়তান ছিল না।
এই নফসই শয়তানকে আল্লাহর হুকুম অমান্য করতে উদ্বুদ্ধ করেছে, পরিণামে সে চিরকালের জন্য অভিশপ্ত শয়তানে পরিণত হয়েছে, কাজেই আমাদের এই নাফসের তাজকিয়া দরকার।
আল্লাহ সুবহানু তায়ালা আল্লাহর রাসুল (সা.) কে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম একটি দায়িত্ব ছিল "মানুষের অন্তর কে পরিশুদ্ধ করা "
আল্লাহ সুবহানু তায়ালা একই সুরাতে সাতবার কসম খেয়ে বলেছেন
قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا
সেই সফলকাম হয়েছে যে নিজ আত্বাকে পরিশুদ্ধ করেছে। [সুরা শামস ৯১:৯]
وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا
এবং সেই ব্যর্থ হয়েছে যে নিজ আত্বাকে কলূশিত করেছে । [সুরা শামস ৯১:১০]
কাজেই আমরা যদি নিজেদের সফলকাম করতে চাই, ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচতে চাই তাহলে আমাদের নফস কে পরিশুদ্ধ করতে হবে।
আর নফসের একটা বৈশিস্ট হচ্ছে, সে সব সময় খারাপ কাজের প্রতি উৎসাহিত করবে, কিন্তু ভালো কাজের দিকে আহবান করবে না।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, হযরত ইউসুফ (আ:) বললেন,
وَمَا أُبَرِّئُ نَفْسِي إِنَّ النَّفْسَ لَأَمَّارَةٌ بِالسُّوءِ إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّي إِنَّ رَبِّي غَفُورٌ رَّحِيمٌ.
আমি নিজের নফসকে পবিত্র মনে করি না, নিশ্চয়ই নফস (সবাইকেই) মন্দ কাজের নির্দেশ দিয়ে থাকে, একমাত্র ওই ব্যক্তি ছাড়া যার প্রতি আমার প্রতিপালক অনুগ্রহ করেন, নিশ্চয় আমার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা ইউসুফ: ৫৩)
অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা যার প্রতি দয়া করেন, কেবল সে-ই নফসের কুমন্ত্রণা থেকে বেঁচে থাকতে পারে। সুবাহান'আল্লাহ!
আমরা একবার আমাদের কথা চিন্তা করি ..!
যেখানে আল্লাহর নবী (আ:) এই কথা বলছেন, যে তিনি তাঁর নফস কে পবিত্র মনে করেন না, সেখানে আমাদের অবস্থা কি?
আমাদের অবস্থা তো এই যে, আমরা আমাদের নসকে পবিত্র করার চিন্তাও করি না।
আমাদের মধ্যে মাশা'আল্লাহ, অন্যান্য ব্যাপারে অনেক আগ্রহ আছে, কিন্তু যখন তাযকিয়ার ব্যাপারে বলা হয়, তখন আমাদের আলসেমি চলে আসে।
কেন ..?
অথচ উচিত ছিলো আমাদের নফস কে পরিশুদ্ধ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। যতটুকু সম্ভব গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। সব সময় আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হবে যেন তিনি শয়তানের ধোঁকা থেকে রক্ষা করেন। ইবাদতের পরিমাণ বাড়াতে হবে। দ্বীনি ফ্রেন্ড সার্কেল তৈরি করতে হবে। সব সময় দোয়া করতে হবে।
আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুক, আমিন..!